পৃথিবীতে বিভিন্ন দেশ ও জাতির কৃষ্টি এবং আচার-আচরণ ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। মন্ডলীর দিক থেকে খ্রীষ্টভক্তগণ কাথলিক অথবা বিভিন্ন প্রটেস্টান্ট মণ্ডলীর অন্তর্ভুক্ত। তথাপি মণ্ডলীর সূচনা থেকে আমরা সবাই সার্বজনীন। সার্বজনীন কথাটাকে অন্যকথায় বলা হয় কাথলিক। খ্রীষ্ট তাঁর অনুসারীদের মনোনীত, নিযুক্ত ও প্রেরণ করেছেন সকল জাতির সকল মানুষের কাছে। তিনি বলেছেন তোমরা জগতের সর্বত্র যাও। সবার কাছে ঘোষণা কর মঙ্গলসমাচার। তিনি আরও বলেছেন মৃত্যুলোকের কোনো শক্তি মন্ডলীকে কখনো পরাভূত করতে পারবে না। যীশু একথা বলেছেন, কারণ তিনি সবসময় পথপ্রদর্শক ও রক্ষাকর্তা হিসেবে মণ্ডলীর সাথে রয়েছেন। মণ্ডলীর সূচনাতে বিভিন্ন দেশের, বিভিন্ন ভাষাভাষির উপস্থিতি মণ্ডলীর সার্বজনীনতার প্রকাশ যা বিরাজ করবে খ্রীষ্টের পুনরাগমন পর্যন্ত।
খ্রীষ্টমন্ডলী কেন্দ্রের সাথে সংযুক্ত থাকার মধ্য দিয়ে সার্বজনীন হয়েছে। প্রভু যীশু খ্রীষ্ট নিজেই মন্ডলী স্থাপন করেছেন এবং তা তাঁর মনোনীত শিষ্যদের ওপর ন্যস্ত করেছেন। যীশু পিতরের নাম দিয়েছেন পাথর। এই পাথরের উপর তিনি তাঁর মন্ডলী স্থাপন করেছেন। পিতরের দৃঢ় বিশ্বাসের ভিত্তির কারণে পিতরের ওপরই মন্ডলীর দায়িত্বভার অর্পণ করেছেন। পিতরের উত্তরাধিকারী হিসেবে পরবর্তীতে অন্য পোপগণ মন্ডলীর দেখাশুনা করার দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ক্ষুদ্র মণ্ডলী ও বৃহত্তর মন্ডলী- দুই-ই রোমের সাথে যুক্ত হয়ে সবার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ভালোবাসা হলো প্রেরণকর্মের প্রেরণা। মন্ডলী তাঁর নেতৃত্বের মধ্যে দিয়ে খ্রীষ্টের ভালোবাসা চারিদিকে ছড়িয়ে দিচ্ছে।
তাছাড়া একই খ্রীষ্ট যীশুতে বিশ্বাস ও সংস্কারীয় সেবা দায়িত্ব আমাদের সার্বজনীনতা দান করে। মন্ডলীতে বিভিন্ন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মন্ডলীর অবস্থান এবং কিছু ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ভিন্ন। তথাপি সব খ্রীষ্টভক্তই একই খ্রীষ্ট যীশুতে দীক্ষিত। অনেক দিক দিয়ে সব মণ্ডলীর বিশ্বাসের অনেক মিল রয়েছে। সেই কারণে ঐক্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা সবসময় চলছে। এটা খ্রীষ্টমন্ডলীর জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ। যে-কোনো মুহূর্তে যে-কেউ এতে যুক্ত হতে পারবে। মণ্ডলী সবার জন্য সেবার হাত বাড়িয়ে রেখেছে এবং সবার মাঝে খ্রীষ্টীয় ভালোবাসা ও প্রেম বিলিয়ে দিচ্ছে।
কাজ: নিকটবর্তী একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে যাবে ও সেখানে গিয়ে বাস্তবে সবার জন্য সেবাকাজে অংশগ্রহণের মাধ্যমে মন্ডলীর সার্বজনীনতা প্রকাশ করবে। |